দেশের ক্রিকেটের যত কালো অধ্যায়
প্রকাশ: শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৫, ৪:৪০ পিএম  (ভিজিট : )
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

তাজাখবর২৪.কম,স্পোর্টস ডেস্ক: তিন দশকে পা রাখতে চলেছে দেশের ক্রিকেট। এখনও পর্যন্ত কোনো আন্তর্জাতিক ট্রফি জিততে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ট্রফি তো দূরের কথা, বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেও উঠতে পারেনি বাংলাদেশ দল। প্রাপ্তির খাতা শূন্য হলেও বেশকিছু কালো অধ্যায়ের সাক্ষী হয়েছে দেশের ক্রিকেট। আসুন জেনে নেওয়া যাক দেশের ক্রিকেটের কালো অধ্যায়ের ইতিহাস

আশরাফুলের ফিক্সিং কাণ্ড (২০১৪)
২০০১ সালে ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ে সিরিজ দিয়ে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে জড়ান মোহাম্মদ আশরাফুল। অভিষেক ম্যাচে ৮ বলে ৯ রান করে আউট হলেও সময়ে সঙ্গে সঙ্গে দেশের ক্রিকেটে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে ওঠেন তিনি। ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২০ বলে ফিফটি করে চমক দেখিয়েছিলেন তিনি।

এরপর থেকেই ওপেনিংয়ে অটোচয়েজ হিসেবে পরিচিত করেছিলেন তিনি। ২০১২ সালে যাত্রা শুরু হয় বিপিএলের। প্রথম দুই আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয় ঢাকা গ্লাডিয়েটর্স। ঢাকাকে চ্যাম্পিয়ন করতে দুই আসরে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছিলেন আশরাফুল। কিন্তু ২০১৩ সালের বিপিএলে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়ান আশরাফুল।যে ঘটনা পুরোদেশকে উত্তপ্ত করেছিল। কারণ, বাংলাদেশের প্রথম পোস্টারবয় হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার আপেক্ষায় ছিলেন আশরাফুল। যাকে দেখে তরুণটা স্বপ্ন দেখতো ক্রিকেটার হওয়ার, তার মতো একজন ক্রিকেটার ফিক্সিংয়ে জড়িত। যা সেটা সহজ মানতে পারেনি কেউই।

প্রথমে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন আট বছরের জন্য। এর মধ্যে স্থগিত নিষেধাজ্ঞা তিন বছরের। আপিলের পর শাস্তিটা কমে হলো দুই বছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞাসহ পাঁচ বছর। সে সময় তার জড়িত তিন সাবেক ক্রিকেটারের নামও বলেছিলেন আশরাফুল। তারা বেঁচে গেলেও শাস্তি ভোগ করেন টাইগার ওপেনার। ওই ঘটনার পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি আশরাফুল।

ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব গোপন করে বিতর্কিত সাকিব (২০১৯) 
২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের হারারেতে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে জড়ান সাকিব আল হাসান। সেই ম্যাচে ৪৯ বলে ৩০ রান করে অপরাজিত থেকে দলকে জয় এনে দিয়েছিলেন তিনি। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি সাকিবকে। পারফরম্যান্স দিয়ে নিজেকে ব্রান্ড হিসেবে তৈরি করেন তিনি। এ ছাড়াও প্রথমবারের মতো বাংলাদেশি হিসেবে তিন ফরম্যাটে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হন তিনি।
সম্প্রতি আইপিএলে মোস্তাফিজকে দেখা গেলেও দেশের ইতিহাসের আইপিএলে নিয়মিত পারফরম করা ক্রিকেটার সাকিব। ২০১১সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত নিয়মিত খেলেছেন তিনি। কলকাতার হয়ে দুটি শিরোপা জয়ে অবদানও রয়েছে এই বিশ্বসেরা তারকার।অর্জনের পাশাপাশি বিতর্কের পাল্লাও ভারি সাকিবের। পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। তবে সময় পারফরম্যান্স দিয়ে তা আড়াল করেছেন। তবে ২০১৯ সালটা ছিল সাকিবের জন্য সবচেয়ে কষ্টের বছর।

২০১৮ সালের আইপিএলে জুয়াড়ির কাছ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার তথ্য গোপন করায় সাকিব আল হাসানকে ক্রিকেট থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল আইসিসি৷ তবে দোষ স্বীকার করায় শাস্তি কমিয়ে ১ বছর করা হয়। এই ঘটনা পুরোদেশকে কাপিয়ে দিয়েছিল। 
কারণ, দেশের সর্বকালের সেরা ক্রীড়বিদ খ্যাতি পাওয়া সাকিব আল হাসানকে নিষিদ্ধ করার বিষয় মেনে নেওয়া সহজ ছিল না ক্রিকেট ভক্তদের জন্য। তবে এই ঘটনা সাকিবকে থামিয়ে দিতে পারেননি। ফিরে এসে আবারও নিজের সিংহাসন বুঝে নিয়েছিলেন তিনি।

স্ট্যাম্পে সাকিবের লাথি ও উপড়ে ফেলা (২০২১)
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ২০২০ সালে মাঠে ফেরার এক বছর পূরণ না হতেই আবারও আলোচনায় আসেন সাকিব আল হাসান। ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে মুখোমুখি হয়েছিল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং। একটি এলবিডব্লুর আবেদনে আম্পায়ার ইমরান পারভেজের কাছ থেকে সাড়া পাননি সাকিব। আর তাদের তাতেই হারিয়ে বসলেন মেজাজ। বিতণ্ডায় জড়ালেন, লাথি দিয়ে ভাঙলেন স্টাম্প।

ঘটনাটা আবাহনী ইনিংসের পঞ্চম ওভারে। মুশফিকুর রহিমের বিপক্ষে নিজের বোলিংয়ে এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। সঙ্গে সঙ্গেই লাথি মেরে স্টাম্প ভাঙেন সাকিব। এই ঘটনার পরও থেকে থাকেননি সাকিব। পরের ওভারেই শুভাগত হোমের বোলিংয়ের সময় বৃষ্টি নামলে আম্পায়ার খেলা বন্ধ করার ঘোষণা দিলে সাকিব আবার নিজের হাতে স্টাম্প উপড়ে ফেলেন
যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। ক্রিকেটের পেশাদায়িত্ব নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। এ ছাড়াও সাকিবকে শূলে চড়াতে ভুল করেননি সাবেক ক্রিকেটার ও বিশ্লেষকরা। আর উত্তপ্ত পরিবেশ তৈরি হয় বিসিবিতে। এই ঘটনায় শাস্তি পান সাকিব।

জাহানারার যৌন হয়রানির অভিযোগ (২০২৫)
সম্প্রতি ক্রিকেট পাড়ায় আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে রয়েছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক জাহানারা আলম।জাতীয় দলের সাবেক নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু ও নারী বিভাগের সাবেক ইনচার্জ প্রয়াত তৌহিদ মাহমুদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন তিনি।এক সাক্ষাৎকারে জাহানারা জানান, জাতীয় দলের সাবেক নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু ও নারী বিভাগের সাবেক ইনচার্জ প্রয়াত তৌহিদ মাহমুদ তাকে যৌন হয়রানি করেছিলেন। এসব বিষয়ে কথা বলার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

সাবেক নির্বাচক মঞ্জুকে নিয়ে তিনি বলেন, উনি একদিন আমার কাছে আসলেন, আমার কাঁধে হাত রেখে বলছিলেন, তোর পিরিয়ডের কতদিন চলছে। পিরিয়ড শেষ হলে বলিস, আমার দিকটাও তো দেখতে হবে। পিরিয়ড শেষ হলে, যখন ডাকবো চলে আসিস।এই ঘটনায় উত্তপ্ত দেশের ক্রীড়াঙ্গন। বিষয়টির জন্য বিসিবি তদন্ত কমিটি গঠন করলেও তামিম, মাশরাফী ও মুশফিকদের দাবি সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি তদন্ত করার। সেই সঙ্গে নারী ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।

তাজাখবর২৪.কম,ঢাকা: শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৩শে কার্তিক ১৪৩২,১৬ জুমাদাল উলা, ১৪৪৭

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ

সম্পাদক: কায়সার হাসান
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: এ্যাডভোকেট শাহিদা রহমান রিংকু, সহকারি সম্পাদক: জহির হাসান,নগর সম্পাদক: তাজুল ইসলাম।
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়: মডার্ণ ম্যানশন (১৫ তলা) ৫৩ মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০।
ফোন: ০৮৮-০২-৫৭১৬০৭২০, মোবাইল: ০১৭৫৫৩৭৬১৭৮,০১৮১৮১২০৯০৮, ই-মেইল: [email protected], [email protected]
সম্পাদক: কায়সার হাসান
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: এ্যাডভোকেট শাহিদা রহমান রিংকু, সহকারি সম্পাদক: জহির হাসান,নগর সম্পাদক: তাজুল ইসলাম।
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়: মডার্ণ ম্যানশন (১৫ তলা) ৫৩ মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০।
🔝