মোহাম্মদ খোরশেদ হেলালী,তাজাখবর২৪.কম, কক্সবাজার: কক্সবাজার উপকূলে লবণ উৎপাদনে ধুমঃব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা। লবণের মুল্য কম হওয়ায় হতাশায় আছেন চাষীরা। সারাদেশের ন্যায় কক্সবাজার উপকূলীয় এলাকায় জেঁকে বসেছে গরম। গরমের এমন দাপটে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কিন্তু মাঠে যারা সোনাফলে লবণ উৎপাদন করে তপ্তরোধ তাঁদের কাবু করতে পারেনি। লবণ উৎপাদনে মাঠে তারা ব্যস্ত সময় পার করছেন। কক্সবাজার উপকূলে লবণ উৎপাদনে ধুমঃব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা, লবণের মুল্য কম হওয়ায় চাষীরা হতাশ দেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ কক্সবাজারের উপজেলা মহেশখালী বিখ্যাত মিষ্টি পানের জন্য। এর পরেই লবণ। এখানকার লবণ কক্সবাজারের অন্য উপকূলে উৎপাদিত লবণের তুলনায় উন্নত ও দানাধার। অর্থাৎ লবণাক্ততার পরিমাণ বেশি। ফলে দামও চড়া। চড়ামূল্যে বিক্রি হওয়ায় স্থানীয় চাষিরা লবণকে সাদাসোনার সঙ্গে তুলনা করেছেন। চাষিরা জানান, তারা লবণের নায্যামূল্য পাচ্ছেনা। চলতি মৌসুমে (২০২৩-২৪) ২৫ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এবার মাঠে নেমেছেন মহেশখালী, উখিয়া,টেকনাফ, কুতুবদিয়া, চকরিয়া,পেকুয়া, ঈদগাহ ও রামুর রশিদ নগর বাঁশখালী আংশিক প্রায় ৩৯ হাজার ৪৮৭ জন লবণচাষি। গত কয়েকদিন আগে রেকর্ড পরিমাণ দরে লবণ বিক্রি হয়েছে মাঠ পর্যায়ে। লবণের দাম থাকলেও বিভিন্ন মোকামে দালাল সিন্ডিকেটের কারসাজির কারণে নায্যামূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রান্তিক চাষিরা। এতে দরপতন হয়েছে। এমনটি অভিযোগ করেছেন লবণ শিল্পে জড়িত চাষিরা। বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মণ লবণ ৩৫০ থেকে ৩৭০ টাকা করে পাচ্ছেন চাষিরা। কিন্তু দালাল সিন্ডিকেট যারা মাথার ঘাম পায়ে পেলে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে সে সমস্ত চাষিদের লবণের দাম মনপ্রতি দিচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত। গত অর্থবছরের মতোই লাভের স্বপ্ন নিয়ে ব্যাপক উদ্দীপনায় চাষিরা এবার ৬৬ হাজার ৪২৪ একর জমিতে লবণ চাষ করছেন। ইতিমধ্যে অনেক চাষি নতুন মৌসুমের কয়েক চালান লবণ তুলে ফেলেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে নির্ধারিত সময়েই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তবে, ভয়ও কাজ করছে চাষিদের মধ্যে। মৌসুমের ফাঁকে যদি কোনো কারণে লবণ আমদানি করা হয়, তখন উৎপাদিত লবণের ন্যায্য দাম না পাওয়ার আশঙ্কা বেশি। এমনটি হয়ে থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের একমাত্র স্বয়ংসম্পূর্ণ খাত লবণশিল্প। ফলে একধরনের আতঙ্কে আছেন তারা। সংশ্লিষ্টদের দাবি, একটি মধ্যস্বত্বভোগী সরকারের উচ্চপর্যায়ে ভুল বুঝিয়ে লবণ আমদানির আয়োজন করতে পারে। অথচ জেলার সাত ও বাঁশখালী লবণ চাষে পুরোদমে মাঠে লবণ উৎপাদন করছেন প্রান্তিক চাষিরা। গত মৌসুমে লবণের ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় এবারও আশা নিয়ে মাঠে নেমেছেন হাজারো চাষি। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের (বিসিক) লবণ শিল্পের উন্নয়ন কার্যালয় কক্সবাজারের উপ-মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জাফর ইকবাল ভুঁইয়া বলেন, গত বছর লবণের ন্যায্যমূল্য পেয়ে প্রান্তিক চাষিরা দ্বিগুণ উৎসাহে মাঠে নেমেছে। এ বছর লবণের গড়মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ থেকে ৪৫০ টাকা। আশা রাখি চাষিরা লবণের উপযুক্ত দাম পাবে।
তাজাখবর২৪.কম: ঢাকা বুধবার, ০৬ মার্চ ২০২৪, ২২ ফাল্গুন ১৪৩০,২৪ শাবান ১৪৪৫