যেভাবে হাইকোর্ট এলাকায় ফেলে আসা হয় আশরাফুলের খণ্ডিত মরদেহ
প্রকাশ: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ১১:১৯ এএম  (ভিজিট : )
সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

তাজাখবর২৪.কম,ঢাকা: রংপুরের ব্যবসায়ী আশরাফুল হককে হত্যার পর তার মরদেহ ২৬ টুকরা করা হয়। এরপর টুকরাগুলো দুটি ড্রামের ভরে ঢাকার হাইকোর্ট এলাকায় ফেলে যান বন্ধু জরেজুল ও পরকীয়া প্রেমিকা।এ ঘটনায় শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত দুজনকে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ও র‌্যাব।গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাতে হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছে দুটি নিল রঙের ড্রামে ২৬ টুকরা মরদেহ পাওয়া যায়। ফিঙ্গারপ্রিন্টের সাহায্যে নিহত আশরাফুল হকের পরিচয় বের করে পুলিশ। তার বাড়ি রংপুরে। করতেন কাঁচামালের ব্যবসা। এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করে আশরাফুলের পরিবার।
 
সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর ২টা ৪৩ মিনিটে সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করে রাজধানীর শনির আখড়ার বাসায় আসেন ওই নারী। পাঁচ মিনিটের মধ্যে সেই সিএনজিতে জরেজুল ইসলামের সঙ্গে বেরিয়ে পড়েন। তাদের সঙ্গে ছিল দুটি ড্রাম। ২০ কিলোমিটার পথ ঘুরে হাইকোর্ট এলাকার মাজার গেটে পৌঁছান জরেজুল ও তার প্রেমিকা। সুযোগ বুঝে বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ড্রাম ফেলে চলে যান তারা।
 
এদিকে আশরাফুল হককে হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। জানায়, পরকীয়ার জেরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। বন্ধু জরেজুলের প্রেমিকা শামীমার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন আশরাফুল। দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেই আশরাফুলকে হত্যা করেন জরেজুল। আর লাশকে করেন ২৬ টুকরা।
 
জিজ্ঞাসাবাদে যা জানা যায়
নিহত আশরাফুল ও মালয়েশিয়া প্রবাসী জরেজুলের বাড়ি রংপুরে। তারা দুজনে বন্ধু। আর অভিযুক্ত নারীর স্বামী থাকেন সৌদি আরবে। তার বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দিতে। সামাজিক যোগাযোগমাধমে পরিচয় থেকে ওই নারীর সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন জরেজুল।দেশে ফিরে প্রেমিকার সঙ্গে ঢাকায় দেখা করেন জরেজুল। তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে শারীরিক সম্পর্কও। জরেজুলের গ্রামের বন্ধু আশরাফুল হক ঢাকায় এলে ওই নারীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। জরেজুল মালয়েশিয়া ফিরে গেলে এবার আশরাফুলও ওই নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
 
আবারো দেশে ফিরে জরেজুল বাসা ভাড়া নিয়ে ওঠেন রাজধানীর শনির আখড়ায়। জরেজুলের ঢাকায় ফেরার খবরে আশরাফুলও আসেন ওই বাসায়। এবার আশরাফুল জরেজুলকে জানিয়ে দেন সম্পর্কের কথা। এতে রেগে গিয়ে বাসা ছেড়ে চলে যান জরেজুল। রাগের মাথায় আশরাফুলের ফোন নিয়ে চলে যান তিনি। রাগ থামলে বুঝতে পারেন ভুল ফোন নিয়ে এসেছেন।আবার বাসায় ফিরে যান জরেজুল। আশরাফুল ও তার প্রেমিকাকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান তিনি। ক্ষিপ্ত হয়ে হাতুড়ি দিয়ে আশরাফুলের মাথায় আঘাত করেন জরেজুল। সঙ্গে সঙ্গে লুটিয়ে পড়েন তিনি। এরপর বালিশ চাপা দিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।
 
হত্যায় সাহায্য করেন ওই নারীও। ২৪ ঘণ্টা মরদেহ নিয়ে বসে থাকেন দুজন। কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না তারা। পরে পরিকল্পনা করেন টুকরো করার। মরদেহ ২৬ টুকরো করে দুটি ড্রামে ভরেন তারা। ঢাকায় নতুন হওয়ায় কোথায় ফেলবেন ড্রাম বুঝতে পারছিলেন না। সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে ঘুরতে ঘুরতে হাইকোর্টের সামনে জায়গা ফাঁকা দেখে ওখানেই ড্রাম দুটি ফেলে পালিয়ে যান তারা।
 
হত্যার পর বুঝতে পারেন রক্ষা নেই আর। পালিয়ে কুমিল্লার দাউদকান্দিতে প্রেমিকার বাসা চলে যান জরেজুল। সেখানে গিয়ে দুজন এবার পরিবর্তন করেন নিজেদের গন্তব্য। দুজন দুদিকে যান।আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, কুমিল্লা দাউদকান্দি থেকেই হত্যার প্রধান আসামি জরেজুলকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশ। হত্যায় ব্যবহৃত হাতুড়িও উদ্ধার করা হয়। আর জরেজুলের প্রেমিকাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। হত্যায় ব্যবহৃত বাকি আলামত উদ্ধার করেছে সংস্থাটি।

তাজাখবর২৪.কম,ঢাকা: শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ৩০শে কার্তিক ১৪৩২,২৩ জুমাদাল উলা, ১৪৪৭

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ

সম্পাদক: কায়সার হাসান
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: এ্যাডভোকেট শাহিদা রহমান রিংকু, সহকারি সম্পাদক: জহির হাসান,নগর সম্পাদক: তাজুল ইসলাম।
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়: মডার্ণ ম্যানশন (১৫ তলা) ৫৩ মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০।
ফোন: ০৮৮-০২-৫৭১৬০৭২০, মোবাইল: ০১৭৫৫৩৭৬১৭৮,০১৮১৮১২০৯০৮, ই-মেইল: [email protected], [email protected]
সম্পাদক: কায়সার হাসান
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: এ্যাডভোকেট শাহিদা রহমান রিংকু, সহকারি সম্পাদক: জহির হাসান,নগর সম্পাদক: তাজুল ইসলাম।
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়: মডার্ণ ম্যানশন (১৫ তলা) ৫৩ মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০।
ফোন: ০৮৮-০২-৫৭১৬০৭২০, মোবাইল: ০১৭৫৫৩৭৬১৭৮,০১৮১৮১২০৯০৮, ই-মেইল: [email protected], [email protected]
🔝