বেঁচে থাকতে ভক্তকে চিঠিতে কী লিখেছিলেন সালমান শাহ?
প্রকাশ: শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৫, ৪:০৮ পিএম  (ভিজিট : )
ভক্তের উদ্দেশে সালমান শাহর হাতে লেখা চিঠি (বামে)। ছবি: সংগৃহীত

ভক্তের উদ্দেশে সালমান শাহর হাতে লেখা চিঠি (বামে)। ছবি: সংগৃহীত

তাজাখবর২৪.কম,বিনোদন ডেস্ক: বাংলা চলচ্চিত্রের রাজপুত্র ‘স্বপ্নের নায়ক’ খ্যাত সালমান শাহ। তিনি শুধু নব্বই দশকে নন, আজও কোটি ভক্তের হৃদয়ে রাজত্ব করছেন। মৃত্যুর ২৯ বছর পরও ভক্তরা বিন্দু পরিমাণ এ নায়ককে ভুল পারেননি কেন জানেন?ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় ৪ বছর কাজ করেন সালমান। সব সময়ই ভক্তদের বেশি প্রাধান্য দিতেন এ নায়ক। শ্রদ্ধা করতেন তাদের ভালোবাসাকে। সিনেমা জগতে এমন নায়ক আর হবে কিনা তা নিয়ে আফসোস করেন সালমানের বন্ধু নৃত্য পরিচালক সাইফুল ইসলাম।

পুরনো স্মৃতি মনে করে সাইফুল বলেন,
আমি দেখেছি অভিনয় করে সালমান যা আয় করতো তার বেশিরভাগই ও খরচ করতো সমস্যাগ্রস্ত মানুষদের পেছনে। কোনো প্রোডাকশন বয় এসে যদি বলতো ভাইয়া আমার মা অসুস্থ, পকেটে যা থাকতো সব টাকা ও দিয়ে দিতো। কেউ যদি সালমানের কাছে এসে বলতো ভাই আমার বোনের বিয়ে টাকা ম্যানেজ করতে পারছি না। হাতে টাকা না থাকলে প্রযোজক, পরিচালকদের কাছ থেকে নিজের কাজের অ্যাডভান্স টাকা নিয়ে তাকে দিয়ে দিতো আমি দেখেছি।
 
শুধু পরিচিত নয়, অচেনা ভক্তের ভালোবাসাকেও সম্মান করতে জানতেন সালমান। এ প্রসঙ্গে এ নৃত্য পরিচালক বলেন,একদিন সালমান শাহ বিকেল ৪টায় শুটিংয়ের সময়ের আগেই এফডিসিতে এসে ক্রিকেট খেলছিলো। হঠাৎ আমাকে দেখে বললো পিৎজা খাবো। তখন শুধু গুলশান এলাকায় পিৎজা পাওয়া যেতো। আমরা হরতালের জন্য নিজেদের গাড়ি বের করতে পারলাম না। একটি রিকশায় উঠলাম। আমাদের গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার পরই রিকশাওয়ালা ছেলেটি বললো ভাই আজ থেকে আর আমি রিকশা চালাবো না। আমরা যখন তাকে কারণ জিজ্ঞাস করি সে বলে আমি রিকশা চালাই না। ১২ দিন ধরে রিকশা চালাচ্ছি। গ্রাম থেকে টাকা নিয়ে শহরে এসেছি শুধু সালমান শাহকে দেখার জন্য। বাড়ি থেকে যে টাকা নিয়ে এসেছিলাম সেটি খরচ হয়ে গেছে। তাই বাধ্য হয়ে রিকশা চালাচ্ছি। কারণ আমি জিদ করেছিলাম সালমান শাহকে না দেখে আমি বাড়ি ফিরবো না।
 
সাইফুল এরপর বলেন,
ভক্তের সব কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছিলেন সালমান। আবেগ অনুভব করতে চেষ্টা করছিলেন। গুলশানের দোকানে সে রিকশাচালক ছেলেটিকে নিয়ে ঢোকে সালমান। ৩টা পিৎজার অর্ডার দেয়। আমার জন্য, সালমানের জন্য আর ওই রিকশাচালক ছেলেটার জন্য। পিৎজা খাওয়ার পর আবার ওকে নিয়ে এফডিসিতে আসলো। নিজে ওকে বসার জন্য চেয়ার এগিয়ে দিলো। হাতে ২ হাজার টাকা দিলো। সালমান বললো, আজ থেকে বাড়ি ফিরে মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করবে। যখন মনে পড়বে আমার সাথে দেখা করতে আসবে। আজ থেকে আমি নায়ক সালমান না, আমি তোমার ভাই, বন্ধু সালমান। ওকে কেন মানুষ ভালোবাসবে না বলুন। এজন্যই ও সালমান শাহ।
 
ভক্তের ভালোবাসা সালমান শাহ এতটাই শ্রদ্ধা আর সম্মান করতেন যে ব্যস্ত সময় পার করলেও তাদের সাথে কথা বলতে কিংবা চিঠির জবাব দিতে তিনি ভুলে যেতেন না। সালমান শাহর এমনই একটি চিঠি পেয়েছিলেন তার ভক্ত ইথেন। বেঁচে থাকতে ভক্তকে কী লিখেছিলেন এ নায়ক জানেন?
 
১৯৯৫ সালে মার্চ মাসের ৮ তারিখে সালমান শাহ তার ব্যক্তিগত ডায়রিতে ভক্ত ইথেনের উদ্দেশে একটি চিঠি লেখেন। তাতে লেখা,স্নেহের ইথেন, আমার অনেক ভালোবাসা ও স্নেহাশিষ নিও। তোমার চিঠি অনেক আগেই আমি পেয়েছি। কিন্তু অসম্ভব ব্যস্ততার কারণে উত্তর দিতে সামান্য দেরি হয়েছে বলে আমি দুঃখিত। মাসুম ভাইয়ের কাছে তোমার কথা অনেক শুনেছি। তোমার মতো একজন ভক্ত আমার আছে জেনে সত্যি খুব আনন্দ পাই এবং মনে মনে খুব গর্বও বোধ করি। তোমাদের মতো অসংখ্য ভক্তদের ভালোবাসাই আমার কাজের প্রেরণা। তোমাদের এই ভালোবাসা আমৃত্যু যেন আমার সাথে থাকে-এই দোয়াই বিধাতার কাছে করি। ব্যস্ততার কারণে অতি সংক্ষেপে চিঠিটা শেষ করতে হচ্ছে বলে আবারও ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। ভবিষ্যতে আবারও চিঠি লেখার আমন্ত্রণ রইলো। ইতি সালমান শাহ।
  
১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে রুপালি পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেছিলেন সালমান শাহ। দর্শকপ্রিয়তায় প্রথম সিনেমাতেই আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তা পান এ নায়ক। ক্যারিয়ারে সর্বমোট ২৭টি সিনেমায় কাজ করে ভক্তদের হৃদয়ে আজও অমর হয়ে আছেন ক্ষণজন্মা এ তারকা। 

তাজাখবর২৪.কম,ঢাকা: শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৩শে কার্তিক ১৪৩২,১৬ জুমাদাল উলা, ১৪৪৭

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ

সম্পাদক: কায়সার হাসান
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: এ্যাডভোকেট শাহিদা রহমান রিংকু, সহকারি সম্পাদক: জহির হাসান,নগর সম্পাদক: তাজুল ইসলাম।
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়: মডার্ণ ম্যানশন (১৫ তলা) ৫৩ মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০।
ফোন: ০৮৮-০২-৫৭১৬০৭২০, মোবাইল: ০১৭৫৫৩৭৬১৭৮,০১৮১৮১২০৯০৮, ই-মেইল: [email protected], [email protected]
সম্পাদক: কায়সার হাসান
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: এ্যাডভোকেট শাহিদা রহমান রিংকু, সহকারি সম্পাদক: জহির হাসান,নগর সম্পাদক: তাজুল ইসলাম।
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়: মডার্ণ ম্যানশন (১৫ তলা) ৫৩ মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০।
🔝