বৃহস্পতিবার ২০ মার্চ ২০২৫

কক্সবাজারের মহেশখালীতে সরকারি গভীর নল কুপ নিতে দিতে হয় ঘুষ
তাজাখবর২৪.কম,ঢাকা:
প্রকাশ: সোমবার, ৮ জুলাই, ২০২৪, ১২:০০ এএম | অনলাইন সংস্করণ
কক্সবাজারের মহেশখালীতে সরকারি গভীর নল কুপ নিতে দিতে হয় ঘুষ

কক্সবাজারের মহেশখালীতে সরকারি গভীর নল কুপ নিতে দিতে হয় ঘুষ

মোহাম্মদ খোরশেদ হেলালী,তাজাখবর২৪.কম,কক্সবাজার: সমগ্র দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পটির অধীনে গত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে মহেশখালী উপজেলায় গভীর নলকূপ স্থাপনের কাছ শুরু করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর নলকূপ বসানোর আগে থেকেই জামানতের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে নিয়েছে চিহ্নিত দালাল চক্রের মাধ্যমে।আর এর জন্য অভিযুক্ত করা হচ্ছে মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া ও শাপলাপুর ইউনিয়নে দাঁড়িত্ব থাকা মেকানিক শহিদুল হাসানের বিরুদ্ধে।গভীর নলকূপ বসানো নিয়ে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের ভুক্তভোগীরা এ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেন।জানাগেছে, মহেশখালী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুর্দশন দাশের তত্ত্বাবধানে এ গভীর নলকূপগুলো স্থাপনের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়,  স্থানীয় সংসদ সদস্য,  উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের সুপারিশে দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় মহেশখালী উপজেলায় মোট ২০০ গভীর নলকূপ বসানোর কাজ চলছে। চলতি অর্থবছরে ২০০টির মধ্যে  উপজেলায় প্রায় ১৮০ টি গভীর নলকূপ বসানো শেষ হয়েছে। বাকিগুলোর কাজ চলছপ্রতিটি গভীর নলকূপের জন্য সরকার বরাদ্দ দিয়েছে ১ লাখ টাকার উপরে।উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এ প্রকল্পে ভয়াবহ অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।গভীর নলকূপ স্থাপনে সরকার নির্ধারিত ফি ১০ হাজার টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে চালান জমা দিতে হয়। কিন্তু জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বেশ কিছু চিহ্নিত দালালের মাধ্যমে প্রতিটি গ্রাহকের কাছ থেকে ১৫ হাজার থেকে ৩০ ও ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ প্রকল্পে একটি নলকূপ থেকে আটটি বাড়িতে সংযোগ দেওয়ার কথা থাকলেও সংযোগ দেওয়া হয়েছে একটি মাত্র বাড়িতে। যারা এ প্রকল্পটির গভীর নলকূপ নিয়েছেন, তারা জানেনই না যে আরও বেশ কয়েকটি বাড়িতে এ পানির লাইন যাবে। আবার অনেকে নিজেদের বাড়ির অন্য সদস্যদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে একাই নলকূপের সুবিধা নিচ্ছেন। বেশ কয়েকটি বাড়িতে নলকূপ বসানো হলেও দেওয়া হয়নি প্রয়োজনীয় বাকি উপকরণ। 

উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মেকানিকদের যোগসাজশে দালাল চক্রটি নিয়ন্ত্রণ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। চক্রটি প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ সাহস পায় না প্রতিবাদ করার।উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের  আলী আকবর বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে পানির কষ্টে ছিলাম, তাই সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করি। তারা আমাকে বলেন, কিছু টাকা খরচ করতে পারলে নলকূপ পাওয়া যাবে। প্রথমে আমি তাকে ১৫ হাজার টাকা দিই, পরে আরও টাকা দাবি করে। কিন্তু গড়িমসি করে এখনোও আমার নলকুপ বসানো হয়নি।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজনে জানান,দালাল চক্রের মাধ্যমে আমার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নেয়। ব্যাংকে ১০ হাজার টাকা জমা দিতে দেখে বলি, টাকা নিলেন ৩০ হাজার আর জমা দিলেন ১০ হাজার টাকা, কারণ কী? প্রশ্ন শুনে দায়িত্বরত সংশ্লিষ্ট একজনে বলেন সিস্টেম এরকম।

কালারমারছড়া, শাপলাপুর ও মাতারবাড়ী ইউনিয়নের নাম পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের একাধিক চিহ্নিত দালাল চক্র আছে, যাদের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের পকেট থেকে টাকা বের করে নেওয়া হয়। মেকানিক শহিদ আছেন, সব দালালের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব। শহিদ আর একা এ টাকা খান না, তার সঙ্গে মহেশখালী উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী সুর্দশন দাশ জড়িত।নাম পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের এক কর্মী বলেন, অফিসের ভেতরে ও বাইরে কী হয়, তা আমরা কেউ বলতে পারব না। তবে সব কিছু নিয়ন্ত্রিত হয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর ইশারায়। ওনার ইশারার ওপর নির্ভর করে মেকানিক শহিদ সব কাজ করে থাকেন।মহেশখালী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুর্দশন দাশ-বলেন, এ ব্যাপারে বাড়তি টাকা নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে আমি জানি না। খোঁজ খবর নিচ্ছি। অভিযোগের সত্যতা পেলে অপরাধীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তিনি এসবে জড়িত নাই বলে জানান।

তাজাখবর২৪.কম: ঢাকা সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪, ২৪শে আষাঢ় ১৪৩১,১ মহররম ১৪৪৬ 

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ

সম্পাদক: কায়সার হাসান
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: এ্যাডভোকেট শাহিদা রহমান রিংকু, সহকারি সম্পাদক: জহির হাসান,নগর সম্পাদক: তাজুল ইসলাম।
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়: মডার্ণ ম্যানশন (১৫ তলা) ৫৩ মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০।
ফোন: ০৮৮-০২-৫৭১৬০৭২০, মোবাইল: ০১৭৫৫৩৭৬১৭৮,০১৮১৮১২০৯০৮, ই-মেইল: [email protected], [email protected]
সম্পাদক: কায়সার হাসান
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: এ্যাডভোকেট শাহিদা রহমান রিংকু, সহকারি সম্পাদক: জহির হাসান,নগর সম্পাদক: তাজুল ইসলাম।
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়: মডার্ণ ম্যানশন (১৫ তলা) ৫৩ মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০।
🔝