গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি হচ্ছে দেড় কিলোমিটার রাস্তা
তাজাখবর২৪.কম,ঢাকা:
প্রকাশ: শনিবার, ১৫ জুন, ২০২৪, ১২:০০ এএম | অনলাইন সংস্করণ
কোদাল-ঝুড়ি নিয়ে জমি থেকে মাটি কেটে রাস্তা তৈরির কাজ করছেন গ্রামবাসী।
তাজাখবর২৪.কম,ঢাকা:নিজেদের স্বেচ্ছাশ্রমে ধান ক্ষেতের মাঝখান দিয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়ক তৈরি করছেন কুমিল্লার বরুড়া পৌরসভার দেওড়া উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা। উপজেলার খোশবাস দক্ষিণ ইউনিয়নের জয়নগর থেকে বরুড়া পৌরসভার দেওড়া পর্যন্ত এ রাস্তা নির্মাণে মাঠে নেমেছেন তারা। শিক্ষা, চিকিৎসা ও কৃষিসহ নানা সুবিধার কথা চিন্তা করে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান দেওড়া উত্তরপাড়ার বাসিন্দারা।সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সকালে হতেই কোদাল-ঝুড়ি নিয়ে রাস্তা তৈরির কাজে চলে আসেন গ্রামের ৩০ থেকে ৪০ জন মানুষ। দেড় কিলোমিটার রাস্তার নির্মাণে দুই পাশের ধানক্ষেত থেকে মাটি কেটে ফেলা হচ্ছে রাস্তায়।
জানা গেছে, বরুড়া উপজেলার খোশবাস দক্ষিণ ইউনিয়নের জয়নগর থেকে বরুড়া পৌরসভার দেওড়া পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার রাস্তা স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মাণ করছে পৌরসভার দেওড়া উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা। রাস্তা নির্মাণে আশপাশের কয়েকটি গ্রামের অর্ধশতাধিক মানুষ বিভিন্ন পরিমাণে জমি দান করেছেন। এতে করে স্বল্প সময়ে আশপাশের দশটি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের শিক্ষা, চিকিৎসা ও কৃষি কাজে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর হবে।স্থানীয়রা জানান, খোশবাস দক্ষিণ ইউনিয়নের জয়নগর এবং আশপাশের ১০টি গ্রামের মানুষকে বরুড়া পৌর সদরে যেতে অনেকটা পথ ঘুরে যেতে হয়। অথচ দেড় কিলোমিটার রাস্তা হলেই মানুষের ভোগান্তি কমে আসে। এছাড়া বিশাল ওই ফসলের মাঠে জমিতে চাষের জন্য ট্রাক্টর যেতে পারে না। ফসল তুলে বাড়িতে নেয়ার জন্য কোনো গাড়িও নামার সুব্যবস্থা নেই। এ জমিগুলোতে পানির সেচ নিয়েও কৃষকদের ভোগান্তি বেশ। ফলে মেয়র-চেয়ারম্যানদের দিকে না তাকিয়ে নিজেরাই সে রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নেন। তাদের সঙ্গে একাত্মতা করে অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ মাটি কেটে রাস্তা তৈরিতে যোগ দেন।
রাস্তা তৈরির অন্যতম উদ্যোক্তা পৌরসভার দেওড়া গ্রামের বাসিন্দা মোশারফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের এ কাজটি সমাপ্ত হতে কতদিন লাগবে জানা নেই। প্রতিদিন প্রায় ২০-৩০ জন কাজ করছেন। সবাই বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করে যাচ্ছেন। রাস্তাটি নির্মাণ হলে পৌরসভার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন দক্ষিণ খোশবাসের যাতায়াতের সুবিধাভোগ করবে প্রায় ১০ গ্রামের মানুষ।এমন সাহসী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে পৌর মেয়র বকতার হোসেন সময় সংবাদকে বলেন, ‘তাদের এ মহৎ কাজ দেখে আমি আবেগাপ্লুত হয়ে গেছি। এখনো অনেক ভালো মানুষ সমাজে আছে। তারা আমাকে প্রথম থেকে বিষয়টা অবগত করেনি। তারপরও আমি জানতে পেরে রাস্তার কাজ দেখতে গিয়েছি। শ্রমিকের চায়ের বিলটাও তারা নিজেরাই দিচ্ছে। আমি এ কাজের জন্য কিছু টাকা দেব। পরে পৌরসভার বরাদ্দ এলে রাস্তায় ইটের সলিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।
তাজাখবর২৪.কম: ঢাকা শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪, ১ আষাঢ় ১৪৩১, ০৮ জিলহজ্ব ১৪৪৫