গাজীপুরে কাভার ভ্যানের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৫ ব্যক্তি মারা গেলেও ক্ষতিপূরণ পায়নি পরিবারগুলো
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম | অনলাইন সংস্করণ
আমিনুল ইসলাম,তাজাখবর২৪.কম: গাজীপুর বড় বাড়িয়ায় কাভার্ড ভ্যানের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে পাঁচটি তাজা প্রাণ ঝরে গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর কোন খোঁজ খবর নেয়নি সংশ্লিষ্ট সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিকপক্ষ অথবা কাভার্ড ভ্যানের মালিক। গাজীপুর গাছা থানা কর্তৃপক্ষ দায় ছাড়া একটি মামলা করেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানালেন, আসামিরা জামিনে বেরিয়ে আসছেন। মামলার কপি চাইলে তিনি বলেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া মামলার কপি দেয়া যাবে না। ওই মামলাটিতে যাকে মূল খুনি দাবি করেছেন মৃতদের পরিবার। সেই অপরাধী ও প্রতার কাভার্ড ভ্যানের মালিক আলমগীরকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে। তারা এ প্রতিবেদকের কাছে বলেন, থানা পুলিশ কেন আলমগীরকে আসামি করছে না বা গ্রেফতার করছে না তা আমাদের কাছে হতাশার কারণ। এদিকে চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর যেসব কাভার্ড ভ্যানের নিম্নমানের সিলিন্ডার সেটআপ ও বডি প্রস্তুত নির্মাণ করতেন। তারা সংবাদ প্রকাশের পর কাজ বন্ধ রেখেছেন। সরে জমিন খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, তারা অত্যন্ত নিম্নমানের কাভার্ড ভ্যানের সিলিন্ডার সেটআপ ও বডি নির্মাণ করছিলে। এদের মধ্যে নুর আলম দাবি করেন কাস্টমাররা যেভাবে কাজ চেয়েছেন আমরা সেভাবেই করে দিয়েছি। বিশেষ করে আলমগীরের বেশ কয়েকটি গাড়ি নিম্নমানের গ্যাস সিলিন্ডার ও গ্যাস সরকারের পাইপ দিয়ে বডি প্রস্তুত করায় একটু চোখের মধ্যে রয়েছে। অন্যদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মৃত ৫ শ্রমিকের পরিবারের সদস্যদের আহাজারি জানো থামছেই না, তাদের সান্তনা দেয়ার ভাষা কারো নেই । কিন্তু কে শোনে কার কথা! যে কাভার্ড ভ্যানের মালিক আলমগীর হোসেন তার বিরুদ্ধে একটি মামলা রুজু করেনি গাজীপুর গাছা থানা। ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব ইন্সপেক্টর জহিরুল জানালেন আসামিরা আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে আসছেন। এ বিষয়ে জহিরুল জানালেন আমাদের আর কি করার আ। অনুসন্ধানে জানা যায়, হাজী ওয়াহেদ সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিকপক্ষ সরকারের সমস্ত নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে সন্ধ্যা ছয়টায় ওই কাভার্ড ভ্যানে গ্যাস সরবরাহ করেছিল। অন্যদিকে কাভার্ড ভ্যানে যে সিলিন্ডারগুলোতে গ্যাস দেয়া হয়েছিল ওই সিলিন্ডার ছিল অক্সিজেন সরবরাহের সিলিন্ডার। অথচ সেই সিলিন্ডারে সিএনজি গ্যাস লোড নেয়া হচ্ছিল। বিস্ফোরক অধিদপ্তর এর সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিরা জানালেন দুটোই অপরাধ সিএনজি ফিলিং স্টেশন রাত ৮ টার আগে গ্যাস সরবরাহ করে অপরাধ করেছেন। অন্যদিকে কাভার্ড ভ্যানটিতে নিম্নমানের গ্যাস পাইপ লাগানোর ফলে যে বিস্ফোরণ হয়েছে সেটিও অপরাধ। সুতরাং এর মালিক গুরুতর অপরাধ করেছেন। এতকিছুর পরেও গাজীপুর গাছা থানা নামমাত্র একটি মামলা রুজু করেন। স্থানীয়রা জানালেন থানা কর্তৃপক্ষ নামমাত্র দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রশ্ন হল যে পাঁচ জন ব্যক্তি মারা গেলেন তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কোন পক্ষই যোগাযোগ করেননি। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায় থানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সিলিন্ডার বহনকারী কাভার্ড ভ্যানের মালিকের গোপন বোঝাপড়ায় মামলাটি বেশি দূরে এগোচ্ছে না। মৃত ব্যক্তিদের স্বজনদের দাবি তারা যেন ক্ষতিপূরণ পান। সর্বশেষ যে পাঁচজনের একজন আলামিন মারা যান তার স্ত্রীর গর্ভে সাত মাসের সন্তান। তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তার সংসারে একমাত্র রোজগারের মানুষটি মারা যাওয়ায় তিনি এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অসহায়ত্ব বোধ করছেন অনাগত সন্তান নিয়ে। এ বিষয়ে আলমগীর সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন আমার গাড়ি জাহান্নামে যাক আমি কাউকে কোন প্রকার ক্ষতিপূরণ দিব না। তিনি এ প্রতিবেদকের সঙ্গে উদ্ধত্য ভাষায় কথা বলেন। অন্যদিকে হাজী ওয়াহেদ সিএনজি ফিলিং স্টেশনের একাধিক মালিক থাকায় তারাও দায় এড়িয়ে চলছেন।
তাজাখবর২৪.কম: ঢাকা মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর ২০২২ ৩০ কার্তিক ১৪২৯,১৯ রবিউসসানি ১৪৪৪ ফাইল ফটো-