শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

মীরসরাইয়ে মহিষের প্রজনন ও নিরাপদ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রয়োজন
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম | অনলাইন সংস্করণ
মীরসরাইয়ে মহিষের প্রজনন ও নিরাপদ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রয়োজন

মীরসরাইয়ে মহিষের প্রজনন ও নিরাপদ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রয়োজন

সানোয়ারুল ইসলাম রনি,তাজাখবর২৪.কম,মীরসরাই: ঝুঁকিমুক্ত মাংস ও দুধের চাহিদা মিটিয়ে মহিষ পালনে অপার সম্ভাবনা রয়েছে মীরসরাইয়ের উপকূলের ম্যানগ্রোভ এলাকাসহ বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে। প্রয়োজন সরকারি কিংবা বেসরকারি উদ্যোগ। মুহুরী প্রকল্পের একদল মহিষের পাল নিয়ে যাচ্ছিল আনোয়ারুল মিয়া। কিশোর বয়স থেকেই রাখাল হিসেবেই এলাকায় সুপরিচিত। এলাকার সকলেই তাকে মহিষ আনোয়ার বলেই জানে। অন্তঃত কয়েক শত মহিষ নিয়ে যাচ্ছেল মীরসরাইয়ের মুহুরী গেইট হয়ে সোনাগাজির পথে। দিনভর ফেনী নদীর মোহনায় বঙ্গোপসাগরের উপকূল মীরসরাইয়ের ইছাখালী কিংবা মঘাদিয়ার চরে কাটিয়ে সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে এমন মহিষের রাখালরা।  গৃহস্থের শ’শ’ মহিষ-গরু বিচরন করে দক্ষিন উপকুলের ম্যানগ্রোভ বাগানে। সূর্য উদয়ে শ’শ’ মহিষ নিয়ে বিস্তৃত বাগানের দূর সীমানায় ছুটে চলে । সন্ধ্যায় মহিষ নিয়ে নির্দিষ্ট খোয়ারে ফিরে আসে।
সব মিলিয়ে এই চরাঞ্চলে শতাধিক মালিকপক্ষের ছোট বড় মহিষের দল মিলে ১০ হাজার মহিষ রয়েছে। এসব মহিষের জন্য নেই কোন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। কখনো কোন মহিষ অসুস্থ হয়ে পড়লে সেই প্রিয় গবাদি প্রাণীকে সুচিকিৎসার আগেই হারাতে হয়। এতে প্রতি মহিষে ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোকসান গুনতে হয়। অথচ একটি মহিষের পেছনে অনেক মালিকের প্রতি মাসে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা করে বিনিয়োগ ও হয়ে  থাকে। ইছাখালীর জনৈক মহিষের মালিক করিম উল্লাহ বলেন কোন মহিষ অসুস্থ হয়ে পড়লে সদরে গিয়ে চিকিসক আনাতে ও অনেক সময় দুদিন সময় নিতে হয়। প্রথম দিন খবর জানালে সুবিধা মতো ২ /১ দিন পরে উনারা আসেন। আবার এই জনপদ থেকে অসুস্থ মহিষ সেখানে নেয়া ও অসম্ভব। তাই বছরে ১০ থেকে ২০ টি মহিষ মৃত্যুবরণ করেন। এতে লক্ষ লক্ষ টাকার লোকসান হয়ে যায় উদ্যোক্তাদের। এই বিষয়ে পশু চিকিৎসা বিভাগের চট্টগ্রামের বিভাগীয় প্রধান ডাঃ শহিদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন উপকূলীয় এলাকার এসব মহিষের মালিকরা আমাদের কাছে তাদের সকল সমস্যা উল্লেখ করে আবেদন করলে আমরা অবশ্যই সেখানে একটি স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র স্থাপনের জন্য সরকারের কাছে প্রক্রিয়াগত আবেদন করবো। এরপর ও আমাদের মাঠকর্মীদের সাথে মহিষের মালিকরা যোগাযোগ রাখলে ও আশা করছি সকল সেবা পেতে পারেন।   
মুহুরী প্রকল্পের জনৈক সচেতন দর্শনার্থি আনোয়ার হোসেন জানান এখানে মহিষের উন্নয়নে সুষম খাবার, ভ্যাক্সিনেশন আর কৃত্রিম প্রজনন-এই তিনটি বিষয় ও অত্যন্ত জরুরি। পৃথক চারণভূমি সৃষ্টির মাধ্যমে মহিষের পর্যাপ্ত সুষম খাবারের নিশ্চয়তা, কৃষকের সচেতনতা আর প্রজননকেন্দ্র গড়ে তুলতে পারলে মহিষ পালনে চরাঞ্চলের অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। শহরভিত্তিক শিল্প সমৃদ্ধির দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করে দক্ষ ব্যবস্থাপনায় উপযুক্ত পরিচর্যা করা গেলে চরাঞ্চলেও দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্যপণ্য উত্পাদনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
আমন উঠে গেলে ইছাখালীর বিভিন্ন চর দাবরে বেড়ায় কালো-ধূসর মহিষের পাল। চরভূমে জন্মানো ঘাস, হাইচা, কচুরিপানা, হরেক রকম সবুজ পাতা এখানের মহিষের খাবার। মহিষগুলো পালে পালে খাবার খেয়ে পানিতে গাঁ ডুবায় খাল ডোবার জলে কেউ চলে যায় উপকূলের সমূদ্র ঘেষা জলাশয়ে। দিনের শেষে একসঙ্গে মিশে যায় বাতামে (একই সঙ্গে অনেক মহিষ) এসে। ফসল মৌসুমে লাঙল টেনে কোনোমতে বেঁচে আছে কেবল স্থানীয় জাতের অনুন্নত কাঁচা ঘাসনির্ভর এই মহিষগুলো বিভিন্ন চরে। তবে দিনে দিনে মহিষের মাংসের চাহিদা বৃদ্ধি ও দুধের দাম বেশি থাকার কারণে সম্প্রতি মহিষের জাত উন্নয়ন ও মহিষ পালনে ঝুঁকছেন কৃষকরা। তাছাড়া মহিষের মাংসতে গরুর মাংস থেকে স্বাস্থ্যহানির ঝুকি অনেক কম। তাই আমিশের ঘাটতি পূরন সহ দুধের অভাব পূরনে মহিষের পাল এর সামগ্রিক অগ্রগতিতে বিশেষ ভূমিকা প্রয়োজন।

তাজাখবর২৪.কম: ঢাকা মঙ্গলবার ০৭ নভেম্বর ২০১৭, ২২ কার্তিক ১৪২৪

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »






সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ

সম্পাদক: কায়সার হাসান
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আর কে ফারুকী নজরুল, সহকারি সম্পাদক: জহির হাসান,নগর সম্পাদক: তাজুল ইসলাম।
ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: মডার্ণ ম্যানশন (১৫ তলা) ৫৩ মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০।
ফোন: ০৮৮-০২-৫৭১৬০৭২০, মোবাইল: ০১৮১৮১২০৯০৮, ই-মেইল: [email protected], [email protected]
সম্পাদক: কায়সার হাসান
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: আর কে ফারুকী নজরুল, সহকারি সম্পাদক: জহির হাসান,নগর সম্পাদক: তাজুল ইসলাম।
ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: মডার্ণ ম্যানশন (১৫ তলা) ৫৩ মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০।
🔝